সোমবার , ২১ এপ্রিল ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ২১ এপ্রিল ২০২৫

‘প্রাণভয়’ নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাথুরুসিংহে?

‘প্রাণভয়’ নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাথুরুসিংহে?
ছবি: সংগৃহীত

গত ৬ মাস আগে অসদাচরণ ও চাকরির শর্ত ভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের পদ থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করে বিসিবি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার তখন দুই মাস পেরিয়ে গেছে। তবুও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে সামগ্রিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল না। তখন প্রাণভয়ে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন হাথুরুসিংহে।

হাথুরুসিংহের সঙ্গে বিসিবির সম্পর্ক ভালোভাবে শেষ হয়নি। শ্রীলংকান এই কোচকে প্রথমে বরখাস্ত করার পর ‘কারণ দর্শানোর’ নোটিশ দেওয়া হয়। পরদিন সেই চিঠি পাঠিয়ে দেন হাথুরুসিংহে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ‘মিসকন্ডাক্ট উইথ আ প্লেয়ার’ (নাসুম আহমেদের সঙ্গে) ও ‘মিসকন্ডাক্ট অ্যাজ আ এমপ্লয়ি।’। তবে তার উত্তরে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বিসিবি। 

গতকাল রবিবার কোড স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপে সেই সময়ের অবস্থা তুলে ধরেন হাথুরুসিংহে, ‘আমার প্রতি বাংলাদেশের সিইওর (বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি) শেষ কথা ছিল যে, আমার চলে যাওয়া উচিত। ‘বোর্ডের কাউকে বলার দরকার নেই, আপনার কি যাওয়ার টিকেট আছে?’ এটা ছিল আমার জন্য সতর্কতা সংকেত। তখনই আমি কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। সাধারণত ওই দেশে ভ্রমণের সময় আমার জন্য একজন ড্রাইভার ও একজন বন্দুকধারী থাকত। তিনি বললেন, ‘‘আপনি কি আজ আপনার বন্দুকধারী ও ড্রাইভারকে পেয়েছেন?’’ আমি বললাম, না, আমার শুধু ড্রাইভার ছিল।’

এরপর দেশে ফেরার টাকা তুলতে ব্যাংকে গিয়েছিলেন হাথুরুসিংহে। সেখানে গিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের কথা শুনে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাথুরুসিংহে। লংকান এই কোচ বলেন, ‘আমি সরাসরি ব্যাংকে গিয়েছিলাম, দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য টাকা তোলার চেষ্টা করছিলাম। আমি যখন ব্যাংকে ছিলাম, তখন টিভিতে একটি ব্রেকিং নিউজ যাচ্ছিল; ‘‘চান্দিকাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি একজন খেলোয়াড়কে লাঞ্ছিত করেছেন।’’ যখন এই খবর এলো, তখন ব্যাংক ম্যানেজার বললেন, ‘কোচ, আমাকে আপনার সঙ্গে যেতে হবে। লোকেরা আপনাকে রাস্তায় দেখলে সেটা আপনার জন্য নিরাপদ হবে না।’

ঘটনার বর্ণনায় হাথুরুসিংহে আরও বলেন, ‘তখন আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি, কারণ আমাকে দেশ থেকে চলে যেতে হবে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মধ্যরাতের ফ্লাইটের জন্য এক বন্ধু আমাকে বিমানবন্দরে নিয়ে গেল এবং আমি একটি টুপি ও একটি হুডি পরে গেলাম, সেখানে কোনো নিরাপত্তা নেই।’

গ্রেপ্তার আতঙ্কেও ছিলেন হাথুরুসিংহে। প্রাণভয়ে ছিলেন দাবি করে এই কোচ বলেন, ‘দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করার জন্য তারা আমাকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করতে পারত। একটা ঘটনা ঘটেছিল যে, আগের সরকারের একজন মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন, রানওয়েতে বিমানটি থামিয়ে তাকে বের করে আনা হয়। এসব আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তারপর প্রবেশপথে এক্স-রে মেশিনে, বিমান বাহিনীর একজন কর্মকর্তা আমাকে বললেন; ‘‘আমি দুঃখিত কোচ, আমি খুব দুঃখিত যে, আপনি চলে যাচ্ছেন।’’ আমি আমার প্রাণ নিয়ে ভয়ে ছিলাম এবং তিনি বলেছিলেন যে, আমি তাদের দেশের জন্য অনেক কিছু করেছি।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়