শুক্রবার , ১৮ এপ্রিল ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ৮ এপ্রিল ২০২৫

ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ৪ দিনের রিমান্ডে

ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ৪ দিনের রিমান্ডে
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর উত্তরা-পশ্চিম থানার আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম জাকির হোসাইন রিমান্ডে নেওয়ার এ নির্দেশ দেন।

উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ দুপুর ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এই মামলায় তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানিতে তুরিন আফরোজ রিমান্ড নামঞ্জুরের জন্য বক্তব্য রাখেন।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। শুনানি শেষে আদালত ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতে উত্তরা পশ্চিম থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান খান রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ দিন ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আব্দুল জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। এরপর তিনি গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারনামীয় ৩০ নম্বর আসামি তুরিন আফরোজ।

রিমান্ড আবেদনের তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, তুহিন আফরোজ এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তাঁর মদদে বাদীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে সাক্ষ্যপ্রমাণে জানা যাচ্ছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং এ ঘটনার পেছনে আর কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তুরিন আফরোজ।

জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

তুরিন আফরোজকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে ওই মামলা চলার মধ্যেই ২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তুরিনকে।

যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ওয়াহিদুলের সঙ্গে গোপন বৈঠকের ঘটনায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তুরিন।

গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। সেদিন বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ব্যক্তিগত কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়েছিল।

ক্ষমতার পালাবদলের সপ্তাহ দুয়েক পর ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুরিন আফরোজসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হেফাজতের সমাবেশে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ তদন্তের আবেদন করা হয়।

ওই আবেদনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়