আল-আকসায় ইহুদিদের প্রবেশ ‘নজিরবিহীনভাবে’ বাড়ছে, কিসের ইঙ্গিত

গত কয়েক দিনে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদি পুণ্যার্থীদের প্রবেশ নজিরবিহীন হারে বেড়ে গেছে। বুধবার ১,২০০ জন ইহুদি টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত এ পবিত্র স্থানে প্রবেশ করেন, যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রতিটি দলে ১৮০ জন করে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, যা ১৯৬৭ সালের পর থেকে চলা ৩০ জনের সীমা ভঙ্গের প্রতীক। ইসলামিক ওয়াক্ফের মতে, পাসওভার উৎসবের সময়ে চার হাজারের বেশি ইহুদি নিয়ম লঙ্ঘন করে আল-আকসায় ঢুকেছেন।
ইসলামিক ওয়াক্ফের আন্তর্জাতিক বিষয়ক পরিচালক আউনি বাজবাজ এ ঘটনাকে “ভীতিকর ও নজিরবিহীন” বলে উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, ২০০৩ সালে ২৫৮ জন ইহুদির প্রবেশের তুলনায় বর্তমান সংখ্যা উদ্বেগজনক। পাসওভারের প্রথম তিন দিনে প্রায় ৩,০০০ পুণ্যার্থী টেম্পল মাউন্টে যান বলে উগ্র ডানপন্থী সংগঠন টেম্পল মাউন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়। অন্যদিকে, ইসরায়েলি পুলিশ দাবি করে, নিরাপত্তা ও ধর্মীয় নিয়ম মেনেই এ প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে।
জেরুজালেমের প্রধান ইহুদি ধর্মীয় নেতা টেম্পল মাউন্টে ইহুদিদের প্রার্থনা নিষিদ্ধ করেছেন ধর্মীয় পবিত্রতার শর্ত পূরণ অসম্ভব বলে। তবে উগ্র বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী ও মন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের মতো রাজনীতিবিদরা এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রার্থনার অধিকার দাবি করছেন। এমনকি কিছু গোষ্ঠী প্রাচীন মন্দির পুনর্নির্মাণের ডাক দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ১৭৫৭ সালের উসমানীয় ফরমান অনুযায়ী “স্থিতাবস্থা” বজায় রাখার কথা বললেও বাস্তবে ইহুদি প্রবেশ বাড়ছে। আউনি বাজবাজ সতর্ক করেন, গাজা যুদ্ধের পর ইসরায়েলি সরকারের সমর্থনে আল-আকসাকে হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের মতো বিভক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। তাঁর মতে, এখানে ধর্মীয় চেয়ে রাজনৈতিক উসকানি বেশি কাজ করছে, যা অঞ্চলে নতুন সংঘাতের ইঙ্গিতবাহী।
ইসলামিক বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসার এ সংকট মুসলিম দেশগুলোর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করলেও ইসরায়েলি নীতিতে এখনো কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।